An article from Africa is a Country forwarded by the Asian Human Rights Commission
by Jacqueline Moudeina
Read this article in [ English ] [ Bahasa ( Indonesia)] [Nepali ( Nepal) ] [ Sinhala ( Sri Lanka) ]
চলতি জুলাই মাসে আফ্রিকান ইউনিয়নের উদ্যোগে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে আমার দেশ চাদের স্বৈরশাসক সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেন হেব্রের বিচার শুরু হচ্ছে সেনেগালে। সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেন হেব্রে ১৯৮২ সালের ৭ জুন থেকে ১৯৯০ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আফ্রিকান দেশ ‘চাদ’ শাসন করেন। চাদে হিসেন হেব্রের রাজত্ব ছিল চরম সন্ত্রাসী। তিনি তার শাসনামলে ডকুমেন্টেশন এন্ড সেকিউরিটি (DDS) সেল গড়ে তোলেন, যা ছিল চাদের জনগণের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের যন্ত্র। ১৯৯২ সালে চাদিয়ান সরকারের উদ্যোগে গঠিত একটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে দেখা যায়, এই অমানবিক ‘ডকুমেন্টেশন এন্ড সেকিউরিটি’-এর জেলখানায় ৪০,০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়: (http://www.hrw.org/news/2015/05/13/senegal-hissene-habre-trial-begin-july-20)
হেব্রের এই ঐতিহাসিক বিচার হচ্ছে প্রথম, যেখানে এক দেশের কোর্ট অন্য দেশের এক মানবতা অপরাধী সাবেক স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে এবং সেই কোর্ট তার বিচার করবে। এই ট্রায়াল আফ্রিকাতে প্রথম সার্বজনীন বিচারব্যবস্থা হিসেবেও চিহ্নিত হবে।
চাদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস দেবি ইতনু এক রাষ্ট্রীয় অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে হেব্রে সেনেগালে নির্বাসিত জীবন-যাপন করছেন। ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা সেনেগালের বিচারালয়ে হেব্রের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।
প্রায় ১৫ বছর আগে — ২০০০ সাল থেকে, আমরা চাদে প্রথম তদন্তকারী ম্যাজিস্ট্রেট-এর কেবিনেট গঠন করি। এতে আমরা হিসেন হেব্রের বিরুদ্ধে ৫৭ টি অভিযোগ এবং নাম উল্লেখ করে তার প্রধান প্রধান সহযোগীদের বিরুদ্ধে সমষ্টিগত অভিযোগ দায়ের করি।
আদালতের প্রথম দুইটি মামলার কার্যবিবরণী, সেনেগাল এবং চাদে দুই স্থানেই ছিল অনেক দীর্ঘ মেয়াদী এবং খুব কঠিন এক যুদ্ধ। সেনেগালে সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুলাভে ওয়াদে চাননি যে সেই দেশের কোন আদালতে হিসেন হিব্রের বিরুদ্ধে কোন ধরণের অভিযোগ গঠন করা হোক। এমনকি তিনি বেলজিয়াম থেকে উপর্যুপরি অনুরোধ সত্ত্বেও হিসেন হিব্রেকে বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতেও অস্বীকার করেছেন, যেখানে আমরা হিব্রের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করতে পারতাম। চাদে আমাদের অসংখ্যবার চেষ্টা সত্ত্বেও, হিব্রে ও তার পোষা গুন্ডাদের বিচারের আওতায় আনার ব্যাপারে আমাদের আবেদন, নিবেদনে আদালত আমাদের ডাকে ইতিবাচক সাড়া দেয়নি।
সেনেগালে বর্তমান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ম্যাকি সল-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পরিস্থিতির পরিবর্তন গঠে।
সেনেগাল এবং আফ্রিকান ইউনিয়ন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে উপনীত হয় এবং কিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, এবং গঠিত হয় ‘এক্সট্রাওরডিনারি আফ্রিকান চেম্বারস (EAC), যা সেনেগালিজ কোর্টের অধীনে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিচার ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্তি হয়। (বার্কিনা ফেসোর বারকিনাবে বিচারকের অধীনে আরও দু’জন সেনেগালের সিনিয়র বিচারপতির আদালতে বিচারকার্য শুরু হবে)। হিসেন হিব্রে ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চাদে তার শাসনামলে মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য বিচারকার্য পরিচালনার জন্য চেম্বারসকে ক্ষমতাপ্রদান করা হয়েছে।
এক্সট্রাওরডিনারি আফ্রিকান চেম্বারস (EAC)-এর তদন্ত ম্যাজিস্ট্রেটগণ চাদে ভিকটিমদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরির জন্য ৪টি তদন্তকারী কমিশন গঠন করেছে। তাদের কাজ সাম্প্রতিক সময়ে শেষ হয়েছে এবং তারা EAC-এর ক্রিমিনাল কোর্টের কাছে তাদের রেফেরেল আদেশ প্রকাশ ও হস্থান্তর করেছে। আমরা খুব শীগ্রই কোর্টে হেব্রের মুখোমুখি হওয়ার প্রতীক্ষায় আছি।
চাদের জনগণের কাছে এটি হচ্ছে একটি দুঃস্বপ্নের শেষ, কারণ গত ২০ বছরের উপর আমরা শুধু আমাদের উপর নির্যাতনের ক্ষতস্থানটিকে প্রতিনিয়ত বয়ে চলেছি, অনিশ্চিত সময় আমরা পার করেছি, কোন ধরণের আশ্বাস ছাড়াই যে একদিন সেইসব মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধীরা একদিন বিচারের আওতায় আসবে। যাদের অনেকেই আবার রাষ্ট্রীয় বড় বড় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবশালী পদে অধিষ্ঠিত হয়ে আছে। তারা নির্যাতিত (ভিকটিম) ও তাদের পাশে যারা দাঁড়িয়েছে, তাদের সবার জন্যই অত্যন্ত বিপদজনক। নির্যাতিতদের মধ্যে অনেকেই মারা গিয়েছেন, তাদের প্রতি অমানবিক অন্যায়ের কোন ধরণের বিচার না পেয়েই।
এটি আমাদের জন্য অনেক বড় জয়, কারণ আমাদের অধ্যবসায় এবং সংকল্প আলোর মুখ দেখল: আদালতে হেব্রের ২০ জন সহযোগীকে ৫ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। যারা তাদের জনগণকে অন্ধভাবে অমানবিক নির্যাতন করে, তাদের জনয় এই রায় একটি বড় শিক্ষা। চাদে শাস্তি থেকে মুক্তির কোন স্থান নেই।
আমি সর্বান্তকরণে যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বাস করি, এবং আমি সব সময়ই বিশ্বাস করেছি যে, এইসব নির্যাতিত মানুষ, যাদের পক্ষে আমি লড়েছি, গত ২০ বছর যাবৎ সুবিচারে প্রশ্নে লড়াইয়ে তাদের মন মানসিকতাকে সোচ্চার রেখেছে। এইসকল নির্যাতিত মানুষ তাদের নিজের দেশ চাদে পরিত্যক্ত হয়েছিল, তাদের নির্যাতিত, নিপীড়িত হওয়াকে কখনোই মর্যাদার চোখে দেখেনি চাদ, এমনকি প্রকাশ্যে কোন ধরণের ক্ষমাপ্রার্থনা করেনি।
তদন্তকারী ম্যাজিস্ট্রেটদের সামনে আরও দু’জন ভিকটিমকে সঙ্গে নিয়ে যখন আমি হেব্রের মুখোমুখি দাঁড়ালাম,
মুখোমুখী শ্রবণে (হিয়ারিং-এ), এইসকল বেশুমার নির্যাতিত মানুষের অবর্ণনীয় নির্যাতনের কথা আমার কণ্ঠস্বরে নির্ভীকভাবে প্রকাশিত হল, যাদের নিজেদের কোন কণ্ঠস্বর ছিল না, এতকাল শুধু নীরব কান্নায় গুমরে মরেছে।
পৃথিবীর অন্য যে কোন মানবাধিকার কর্মীর মত, আমার দিক দিয়ে আমি বিশ্বাস করি যে, একটি দেশে বিচার হীনতার সংস্কৃতি, শাস্তি থেকে মুক্তি সমস্ত ধরণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের মূল কারণ। আমি নিশ্চিত যে স্বৈরশাসক হিসেন হিব্রের বিচার আফ্রিকার বিচার ব্যবস্থায় একটি অন্যতম সন্ধিক্ষণ এবং বাঁক হিসেবে স্বীকৃত হবে। আমার বিশ্বাস এই বিচার চাদে ব্যাপক এবং ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমাপ্তি নিশ্চিত করবে, এই বিচার আফ্রিকার অন্যান্য দেশের রাজনৈতিক নেতাদের নাশকতামূলক চিন্তাকে দূরীভূত করবে এবং তাদের নিজের দেশের জনগণের নিকটে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে জনগণকে শ্রদ্ধা করতে পরিবেশ তৈরি করবে।
————
জ্যাকুইলিন মৌদেনা একজন চাদিয়ান আইনজীবী এবং চাদিয়ান এসোসিয়েশন ফর দ্য প্রমোশন এন্ড ডিফেন্স অব হিউম্যান রাইটস (ATPDH) -এর প্রেসিডেন্ট। তিনি ২০১১ সালে রাইট লাইভলিহুড এওয়ার্ড বিজয়ী। রাইট লাইভলিহুড এওয়ার্ড বিকল্প নোবেল প্রাইজ হসেবে খ্যাত। বিস্তারিত জানার জন্য, ভিজিট করুন:
The Article originally appeared in Africa is a Country.